গুগল ব্লগস্পট ব্লগে টপ লেভেলের ডটকম বা ডট নেট কাষ্টম ডোমেইন যুক্ত করে সার্চ ইঞ্জিন ও ভিজিটরদের কাছে ব্লগের গুরুত্ব অধিক বৃদ্ধি করা যায়। আমি সব ধরনের ব্লগের ক্ষেত্রে কাষ্টম ডোমেইন ব্যবহারের পক্ষে সমর্থন করি। তার কারণ হচ্ছে বর্তমানে খুব অল্প দামে একটি টপ লেভেলের ডোমেইন কিনতে পাওয়া যায় এবং এটি ভিজিটরদের কাছে ব্লগের গ্রহনযোগ্যতা বাড়িয়ে তুলে। আপনি গুগল ব্লগস্পট ব্লগ কিংবা যে ধরনের ফ্রি অথবা পেইড হোস্টিং কিনে ব্লগিং করেন না কেন ব্লগিং শুরুর সাথে সাথে একটি Custom Domain যুক্ত করে নিবেন।

গুগল BlogSpot ব্লগ নতুন ব্লগারদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্লগিং প্লাফর্ম। নতুন ব্লগারদের জন্য জনপ্রিয়তার বেশ কিছু কারন রয়েছে। BlogSpot গুগল এর নিজেস্ব প্রোডাক্ট হওয়ার কারনে অত্যান্ত বিশ্বস্ততার সহিত ব্লগিং করা যায়। তাছাড়া BlogSpot দিয়ে ব্লগিং করার জন্য কোন ধরনের কোডিং স্কিল এর প্রয়োজন হয় না। তাছাড়া এটিতে আনলিডিটেড স্টোরেজ ফ্রিতে দেওয়ার কারনে কোন ধরনের হোস্টিং কিনতে হয় না।
  • আরো পড়ুন - কিভাবে Google BlogSpot দিয়ে একটি ফ্রি ব্লগ তৈরি করতে হয়?
সাধারণত BlogSpot ব্লগের জন্য যে ডোমেই ফ্রি দিয়ে থাকে সেটি হচ্ছে একটি সাবডোমেইন। তবে আপনি নিজস্ব ডোমেইন না কিনেও ব্লগিং চালিয়ে যেতে পারবেন। বর্তমানে যেহেতু খুব সহজে অল্প দামে ডটকম ও ডট নেট ডোমেইন পাওয়া যায় সেহেতু ব্লগের মান বৃদ্ধির জন্য হলেও একটি Custom Domain যুক্ত করা উচিত। আমি ইতোপূর্বে ৩ টি ডোমেইন কিনে ব্লগস্পটে ব্যবহার করেছি এবং বর্তমানেও করছি। আমার প্রতিটি ডোমেইন HostMight থেকে কিনেছি। HostMight হচ্ছে একটি বাংলাদেশী ডোমেইন ও হোস্টিং প্রোভাইডার কোম্পানি। আমার বর্তমান ডোমেইন HostMight থেকে মাত্র ৫৯৯ টাকায় কিনেছি। আপনি ইচ্ছে করলে তাদের নিকট হতে ডোমেইন ও হোস্টিং কিনতে পারেন। বাংলাদেশী কোম্পানি হওয়ার কারনে মোবাইলের মাধ্যমে সরাসরি যে কোন ধরনের সাপোর্ট পাওয়া যায়। তাছাড়া Bkash এর মাধ্যমে ডোমেইন ও হোস্টিং এর টাকা পরিশোধ করা যায়। যার ফলে পেপাল, পেওনার বা মাস্টার কার্ড এর কোন প্রয়োজন হয় না।
  • আরো পড়ুন - কিভাবে যে কোন ধরনের Domain Transfer করতে হয়?
আপনি অবশ্যই জানেন যে, ব্লগের সাবডোমেইন www.blogname.blogspot.com হয়ে থাকে। অন্যদিকে Custom Domain যুক্ত করার পর www.blogname.com হয়। সাধারন দৃষ্টিতে আপনার কাছে টপ লেভেলের ডোমের এড্রেসটি ভালো লাগবে। কারণ টপ লেভেলের ডোমেইন এড্রেসটি ছোট এবং দেখতে সুন্দর। ব্লগের পাঠকগণ BlogSpot ডোমেইন এর চাইতে টপ ডোমেইনটি বেশী গ্রহন করবে।

কেন BlogSpot ব্লগের জন্য Custom Domain প্রয়োজন?

আপনি নিশ্চয় আমাদের উপরের লেখা থেকে একটি ব্লগের জন্য কেন Custom Domain প্রয়োজন সেই সম্পর্কে কিছুটা ধারনা পেয়ে গেছেন। তারপরও আমি এ বিষয়ে বিস্তারিত লেখার চেষ্টা করব।

১। ব্লগের গ্রহনযোগ্যতা বৃদ্ধিঃ

আপনি যখন কোন কিছু গুগল সার্চ ইঞ্জিনে খোঁজেন তখন সার্চ রেজাল্টে BlogSpot ডোমেইন এর কোন আর্টিকেল পেলে সেটি না পড়ে টপ লেভেলের ডোমেইন সম্বলিত ব্লগের ঠিকানা খোঁজতে থাকেন। তার কারন হচ্ছে নরমালি BlogSpot ব্লগের উপর আপনি ভরসা করতে পারেন না। যার কারনে ভালোমানের কনটেন্ট নিয়ে র‌্যাংক করা সত্বেও অধিকাংশ ভিজিটর ব্লগের আর্টিকেল পরিহার করার চেষ্টা করে। কাজেই পাঠকের কাছে ব্লগের গুরুত্ব বৃদ্ধির জন্য অবশ্যই একটি টপ লেভেলের Custom Domain যুক্ত করে নিবেন।

২। এসইও এর ক্ষেত্রে সুবিধাঃ

এটি নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, একটি BlogSpot ডোমেইন এর চাইতে টপ লেভেলের কাষ্টম ডোমেইনকে সার্চ ইঞ্জিন অধিক প্রাধান্য দিবে। এ বিষয়টি আপনার ব্লগ Google Search Console এ সাবমিট করার পর অনুধাবন করতে পারবেন। কারণ সার্চ ইঞ্জিন বট BlogSpot ডোমেইন এর ব্লগকে ক্রল করবে কিন্তু সহজে Index করবে না। আর যতক্ষণ পোষ্ট সার্চ ইঞ্জিনে ইনডেক্স হবে না ততক্ষণ পর্যন্ত পোস্ট সার্চ রেজাল্টে শো করবে না।

৩। অল্প দামঃ

আমি আগেও বলেছি মাত্র ৬০০/৭০০ টাকায় একটি টপ লেভেলের ডোমেইন কিনতে পাওয়া যায়। কাজেই একটি টপ লেভেলের ডটকম ও ডট নেট Custom Domain ডোমেইন কিনতে আমার মনেহয় আপনাকে আর্থিক কোন সমস্যায় পড়তে হবে। কারন ব্লগস্পটের ক্ষেত্রে কোন হোস্টিং কিনার জন্য অতিরিক্ত টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে না। আপনি ইচ্ছে করলে এই লিংকে ক্লিক করে HostMight থেকে ডোমেইন কিনতে পারেন।

৪। অ্যাফিলিয়েট প্রমোটঃ

একটি ব্লগস্ট ব্লগের মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে চাইলে অবশ্যই একটি ডটকম Custom Domain সেট করে নিবেন। কারণ অ্যাফিলিয়েট কোম্পানি BlogSpot ডোমেইনে কোনভাবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য অনুমোদন করবে না। তাছাড়া নিজের পন্য প্রমোট করতে চাইলেও অবশ্যই একটি ভালোমানের ডোমেইন লাগিয়ে নিতে হবে।

৫। গুগল এ্যাডসেন্স অনুমোদনঃ

এক সময় ছিল যে কোন ধরনের ব্লগে খুব সহজে গুগল এ্যাডসেন্স অনুমোদন পাওয়া যেত। কিন্তু সম্প্রতি গুগল এ্যাডসেন্স এর টার্ম এন্ড কন্ডিশন আরো কঠিন হওয়ার কারনে কোন ভাবে Custom Domain ব্যতীত BlogSpot ডোমেইনে এ্যাডসেন্স অনুমোদন করছে না। আমি এ বছরের শুরুর দিকে একটি ব্লগস্পট ব্লগ দিয়ে গুগল এ্যাডসেন্স এর জন্য আবেদন করেছিলাম কিন্তু তিন মাস অতিবাহিত হওয়া সত্বেও এখনো পর্যন্ত এ্যাডসেন্স টিম আমার আবেদনের কোন জবাব দেয়নি।

৬। সোসিয়াল মিডিয়া প্রমোটঃ

বিভিন্ন সোসিয়াল মিডিয়াতে আপনার ব্লগকে প্রমোট করতে চাইলে অবশ্যই একটি Custom Domain যুক্ত করে নিতে হবে। কারণ সোসিয়াল মিডিয়াতে আজকাল মানুষজন ভালোমানের ব্লগ ব্যতীত ভিজিট করতে চায় না। তাছাড়া ফেইসবুক, টুইটার ও পিনটারেস্ট এর মত জনপ্রিয় সোসিয়াল মিডিয়াগুলো BlogSpot ডোমেইনকে প্রাধান্য দেয় না।

৭। প্রফেশনাল ব্লগঃ

আপনি একটি BlogSpot ডোমেইন দিয়ে ব্লগে যত ভালোমানের আর্টিকেল শেয়ার করুন না কেন ভিজিটরদের কাছে আপনার ব্লগের প্রফেশনাল ভাব ফুটে উঠবে না। একটি ব্লগকে ব্রান্ডিং হিসেবে পরিচিত করার ক্ষেত্রে টপ লেভেলের Custom Domain এর বিকল্প কিছুই নেই।

কি ধরনের Custom Domain কিনবেন?

সাধারণত ডটকম ও ডট নেট টাইপের ডোমেইন গুলোর গুরুত্ব বেশী। কাজেই আমার পরামর্শ থাকবে যে, আপনার ব্লগের বিষয়ের সাথে মিল রেখে একটি ডটকম ডোমেইন যুক্ত করবেন। ডোমেইন নির্বাচনের ক্ষেত্রে আপানার ব্লগের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ইংরেজী ও সহজ নাম বাছাই করবেন। অনেক ক্ষেত্রে দেখায় যায় বেশীর ভাগ লোক ব্লগের এমন ডোমেন নির্বাচন করে যেটির বানান মনে রাখা কষ্ট হয়ে যায়। তাছাড়া বাংলা নামের ডোমেইন নিলেও বাংলা নামটি ইংরেজীতে বানান করার করতে সমস্যা পড়তে হয়।

উদাহরণ হিসেবে দেখুন - আমার পূর্বের ব্লগের নাম ছিল প্রযুক্তি ডট কম। এই ডোমেইনটির ইংরেজী বানান ছিল Prozokti.Com. এখানে অনেকেই প্রযুক্তি বানানটি লেখার ক্ষেত্রে Projukti, Projukthi, Prozukti, Prozukthi ইত্যাদি নামে সার্চ করত। এতেকরে ব্লগ না পেয়ে অন্যের ব্লগে চলে যেত। কাজেই সহজ ও ইংরেজী নামের ডোমেইন নিতে পারলে অনেক ক্ষেত্রে বানান মনে রাখার বিষয়টি সহজ হয়ে যায়।

সর্বশেষঃ আসলে আজকের পোস্টের মাধ্যমে আমি একটি BlogSpot ব্লগের জন্য Custom Domain ব্যবহারের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বুঝানোর চেষ্টা করেছি। আশাকরি আপনি বিষয়টি সম্পর্কে একটি সুস্পষ্ট ধারনা পেয়েছেন। আপনাদের সাপোর্ট পেলে BlogSpot ব্লগে Custom Domain সেটআপ করার একটি পূর্ণাঙ্গ পোষ্ট শেয়ার করার চেষ্টা করব,।

1 Comments

Post a Comment

Previous Post Next Post