ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা বিভিন্নভাবে তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য অনুসন্ধান করে থাকেন। কেউ সরাসরি এড্রেস লিখে তার কাঙ্খিত ওয়েবসাইট ভিজিট করেন। আর যাদের নির্দিষ্ট সাইটের এড্রেস জানা থাকে না তারা সাধারণত সার্চ ইঞ্জিনে বিভিন্ন কিওয়ার্ড লিখে সার্চ দেন। তখন সার্চ ইঞ্জিন তার কিওয়ার্ড অনুযায়ী বিভিন্ন তথ্য প্রদান করে থাকে। বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় হচ্ছে Google, Yahoo এবং  Bing সার্চ ইঞ্জিন। বেশিরভাগ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য খুঁজার জন্য সার্চ ইঞ্জিনের উপর নির্ভরশীল। সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে কোন এড্রেস না জেনেই অনেক সহজে প্রয়োজনীয় তথ্য বা ওয়েবসাইট খুজে পাওয়া যায়। তাই ইন্টারনেট ব্যবহারকারী এবং ওয়েব ডেভেলপারদের কাছে সার্চ ইঞ্জিনের গুরুত্ব অনেক বেশি।

আমরা সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করে এক পলকেই প্রয়োজনীয় হাজার হাজার তথ্য হাতের লাগালেই পেয়ে যাই। কখনো এটা ভাবিনি যে, এই তথ্য কোথা থেকে আসে বা কিভাবে আসে? এই প্রশ্নের উত্তর সবাই সহজে বলবে, আমাদের ওয়েব ব্রাইজারের মাধ্যমে গুগল এ সব তথ্য দিয়ে থাকে। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে গুগল এ সমস্ত তথ্য কোথা থেকে পায়? আজকে আমি আপনাদের দেখাব গুগল কিভাবে আপনাদের এই তথ্য দিয়ে থাকে এবং কিভাবে আপনার প্রিয় ব্লগটিও সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে সবার সামনে হাজির করে থাকে।

সার্চ ইঞ্জিন কি?

সার্চ ইঞ্জিন হচ্ছে অনলাইনে তথ্য খুঁজার ওয়েব মেশিন বা সফটওয়ার। অনলাইনে যত ধরনের তথ্য থাকে একটি সার্চ ইঞ্জিন প্রথমে সেই তথ্যগুলো তার তথ্য ভান্ডারে জমা করে এবং পরে সেই তথ্যগুলো তার মজুদকৃত তথ্য ভান্ডার হতে আমাদের সামনে প্রদর্শণ করে। এক কথায় বলতে পারেন, অনলাইন হতে তথ্য সংগ্রহ করা ও সেই তথ্য মানুষের সামনে তুলে ধরার মেশিন বা সফটওয়ারকে সার্চ ইঞ্জিন বলে।

সার্চ ইঞ্জিন কিভাবে কাজ করে?

সাধারণত অনলাইন হতে তথ্য সংগ্রহ করার জন্য প্রত্যেকটি সার্চ ইঞ্জিনের এক ধরনের সফটওয়ার থাকে। এই সফটওয়ারকে সার্চ ইঞ্জিনের ভাষায় ওয়েব ক্রলার বা রোবট বা বট বলা হয়। একটি ওয়েব ক্রলার বা বট এর প্রধান কাজ হচ্ছে অনলাইনে যত ওয়েবসাইট আছে সেগুলোতে ঘুরে ঘুরে বাড়ানো এবং বিভিন্ন ওয়েবসাইট/ব্লগ হতে তথ্য সংগ্রহ করে নিয়ে সার্চ ইঞ্জিনের তথ্য ভান্ডারে মজুদ রাখা। যখন কেউ কোন তথ্য খুঁজে পাওয়ার জন্য সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ করে, তখন সার্চ ইঞ্জিন তার ডাটাবেজ চেক করে এবং সার্চ ইঞ্জিনের ডাটাবেজ থেকে আমাদের সামনে ফলাফল প্রদর্শন করে।

আসলে সার্চ ইঞ্জিনের ভাষায় এ সব বিষয় ব্যাখ্যা করলে, আমার মত যারা আছেন, তারা এসব বিষয় সহজে বুঝতে পারবেন না। সেই জন্য সার্চ ইঞ্জিনের ভাষায় বিশ্লেষণ না করে সকলের বুঝার সুবিধার্তে বিষয়টি সহজভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করছি। যেমন-

এগুলো পড়তে পারেন-

আপনার হাতের নাগালের ডেস্কটপ বা ল্যাপটপ বা মোবাইলের হার্ড ডিস্কে যখন কোন ফাইল বা গান রাখেন তখন খুব সহজে এটি পেয়ে যান, কিন্তু ইন্টারনেট হতে যে তথ্যগুলো আপনি দেখতে পান সেগুলোত আপনার কম্পিউটার বা মোবাইলের হার্ড ডিস্কে থাকে না। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে সেগুলো কোথা থেকে কিভাবে আসে? নিচে আমি আপনাকে একটি উদাহরনের মাধ্যমে বিষয়টি পরিষ্কার করছি।

উদাহরণঃ ধরুন আপনার কম্পিউটারের হার্ড ডিস্কটি কম্পিউটারের সাথে সংযুক্ত না রেখে অন্য কোথাও রেখে দিলেন। তাহলে আপনার ঐ হার্ড ডিস্কের ফাইল বা গানগুলো কিভাবে দেখবেন? এই কাজটি করার জন্য প্রয়োজন হবে আপনার ঐ হার্ড ডিস্কটি বিশেষ প্রযুক্তির মাধ্যমে অর্থাৎ নেটওয়ার্ক সার্ভার তৈরি করে ইন্টারনেটের সাথে কানেক্ট করা। কেবল তখনই আপনি হার্ড ডিস্কটি আপনার কম্পিউটারের সাথে সংযুক্ত না করেও ঐ ফাইলগুলো দেখতে পাবেন। ঠিক তেমনি প্রত্যেকটি সার্চ ইঞ্জিনের এ ধরণের বিশাল বিশাল হার্ড ডিস্কের সমন্বয়ে তৈরি করা সার্ভার রয়েছে। যেগুলোতে প্রত্যেকটি সার্চ ইঞ্জিন ইন্টারনেটের সকল তথ্য তাদের ঐ হার্ড ডিস্কে মজুদ করে রাখে এবং সেখান থেকেই সাবার সামনে সার্চ কোয়ারী অনুযায়ী তথ্য প্রদান করে। এখন আপনার মনে হয়ত আরেকটি প্রশ্ন জাগবে যে, কিভাবে সার্চ ইঞ্জিন এসব তথ্য সংগ্রহ করে?

কিভাবে সার্চ ইঞ্জিন তথ্য সংগ্রহ করে?

আপনাদের মধ্যে যারা আমার মত কম্পিউটার ও ইন্টারনেট সম্পর্কে কম বুঝেন, তারা নরমালি ভেবে থাকেন যে, যখন গুগলে কোন কিছু লিখে সার্চ করা হয় তখন গুগল তাদের তৈরি করা তথ্য হতে আপনাকে বিভিন্ন তথ্য দেখায়। আসলে গুগল আমাদেরকে যেসব তথ্য দেখায় সেটির একটিও তাদের তৈরি নয়। আপনি হয়ত এ কথাটি শুনার পর অবাক হচ্ছেন! এখানে অবাক হওয়ার কিছুই নেই। এ বিষয়টি আমি আপনাদেরকে আরো সহজভাবে বুঝানোর চেষ্টা করছি।

বর্তমানে এমন কিছু নেই যেটি গুগলে সার্চ করলে পাওয়া যাবে না। একটি পিপড়া থেকে শুরু করে মহাকাশ গবেষনার মত কঠিন ও জঠিল বিষয়ে গুগলে সার্চ দিলে গুগল আপনাকে মুহুর্তে তথ্য দিয়ে দেবে। মোট কথা গুগলের কাছে নেই বলতে কোনকিছু নেই।

এগুলো পড়তে পারেন-

এখন আপনি ভেবে দেখুন, একটি কোম্পানির পক্ষে এত তথ্য তৈরি করা সম্ভব কি না? আপনি বিষয়টি ভালোভাবে চিন্তা করলে অবশ্যই বুঝতে পারবেন। একটি কোম্পানি যত বড় হক না কেন, এত তথ্য তৈরি করা কোন কোম্পানির পক্ষে কোন দিন সম্ভব হবে না। এখানে আপনার মনে আরো খটকা তৈরি হচ্ছে। তাহলে গুগল কিভাবে আমাদেরকে এতসব তথ্য দেখায়।

আপনি এটা নিশ্চয় জানেন যে, অনলাইনে বর্তমানে কোটি কোটি ওয়েবসাইট ও ব্লগ রয়েছে। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ নতুন ওয়েবসাইট বাড়ছে। এ মহাবিশ্বে যত মানুষ রয়েছে, তারাই এসব ব্লগ ও ওয়েবসাইট তৈরি করছে। প্রত্যেকটি ওয়েবসাইটের মালিক তার জ্ঞান ও অভীজ্ঞতা নিজ নিজ ওয়েবসাইটে লিখছে। আমার ব্লগটিও কোটি কোটি ওয়েবসাইটের মধ্যে একটি। এখানে সার্চ ইঞ্জিন বা গুগল সার্চ ইঞ্জিন যেটা করছে সেটা হচ্ছে যে, এক ধরনের ওয়েব সফটওয়ার বা ক্রলার বা বট এর সাহায্যে পুরো বিশ্বের কোটি কোটি ওয়েবসাইটের তথ্য তাদের তথ্য ভান্ডারে বা ওয়েব সার্ভারে জমা করে নিচ্ছে। পরবর্তীতে আপনি আমি যখন গুগল সার্চ ইঞ্জিনে বা অন্য কোন সার্চ ইঞ্জিনে কোন কিছু লিখে সার্চ করে তখন সার্চ ইঞ্জিন তাদের তথ্য ভান্ডারে মজুদ রাখা তথ্য হতে যেটি সবচাইতে ভালো সেটি আমাদের সামনে ধারাবাকিভাবে শো করে। তখন গুগল সার্চ ইঞ্জিন হতে সেই ওয়েবসাইটের লিংকে ক্লিক করে আমাদের প্রয়োজনীয় তথ্য দেখে নেই। আসলে গুগলে প্রদর্শিত সেই ওয়েবসাইটগুলোর মালিক গুগল নয়। গুগল এখানে পরের ঘাড়ে চড়ে নিজের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এটাকে এক ধরনের জ্ঞানের খেলা বলতে পারেন।

সার্চ ইঞ্জিনের তথ্য সংগ্রহ করার ধাপসমূহ

সাধারণত একটি সার্চ ইঞ্জিন তথ্য সংগ্রহ করার কাজটি তিনটি ধাপে করে থাকে। যেমন- ক্রলিং, ইনডেক্সিং ও ফলাফল প্রদান।

ক্রলিং

প্রথম ধাপে সার্চ ইঞ্জিন তার ক্রলার বা বট-কে বিশ্বের প্রতিটি ওয়েবসাইটে তথ্য সংগ্রহ করার জন্য পাঠায়। দ্বিতীয় ধাপে ওয়েব ক্রলার বা বট প্রত্যেকটি ওয়েবসাইটের কনটেন্ট বা পোস্ট crawl করে। একটি ওয়েবসাইটের পোস্টের ভীতরে যত ধরনের লেখা, ইমেজ ও ভিডিও থাকে সেগুলো ক্রল করার মাধ্যমে তথ্য ভান্ডারে ইনডেক্স হয়।

প্রত্যেকটি সার্চ ইঞ্জিনের এক ধরনের Web Crawlers সফটওয়ার রয়েছে। সার্চ ইঞ্জিনের ভাষায় এগুলিকে “রোবট বা বট” বলা হয়ে থাকে। এই Web Crawlers ইন্টারনেটের যত ওয়েবসাইট রয়েছে সেগুলির প্রত্যেকটি লিংক প্রতিনিয়তই ভিজিট করে। প্রতিবার একটি সাইট ভিজিট করার সময় ঐ সাইটের নতুন লিংকগুলো সংগ্রহ করে এবং Dead Link সার্ভার হতে মুছে দেয়। এভাবে প্রতিটি সাইট প্রতিনিয়তই Crawl হতে থাকে এবং নিত্য নতুন তথ্য তাদের সার্চ ইঞ্জিনের সার্ভারে মজুদ হতে থাকে।
সার্চ ইঞ্জিনের তথ্য সংগ্রহ করার ধাপসমূহ
সাধারণত প্রত্যেকটি সার্চ ইঞ্জিন একটি স্পাইডার বা ওয়েব ক্রলার পাঠিয়ে সমস্ত লাইভ ওয়েবসাইট থেকে যতটা সম্ভব তথ্য সংগ্রহ করে। যখনই কোন ওয়েবসাইটে নতুন কোন তথ্য অ্যাড করা হয় কিংবা পুরনো তথ্য এডিট করে আপডেট করা হয়, তখনই ওয়েব ক্রলার বা সার্চ ইঞ্জিন বট সেখানে হাজির হয়ে নতুন তথ্য নিয়ে নেয়।

এমনকি, যদি দীর্ঘদিন ধরে কোন ওয়েবসাইটে নতুন পোস্ট না দেয়া হয় কিংবা পুরনো পোস্ট এডিট করা না হয়, তবুও সার্চ ইঞ্জিন ক্রলার সেই ওয়েবসাইট ভিজিট করা বন্ধ করে দেয় না, বরং নিয়মিতই ভিজিট করতে থাকে। এভাবে, মিনিটে মিনিটে লাখ লাখ ওয়েবসাইট ভিজিট করে সার্চ ইঞ্জিন বটগুলো ইন্টারনেটে থাকা যাবতীয় সব তথ্য সংগ্রহ করে রাখে।

ইনডেক্সিং

যেকোনো সার্চ ইঞ্জিনের ক্রলার বা রোবট ক্রল করার মাধ্যমে পেজকে ইনডেক্স করে নেয়। ইনডেক্স বিষয়টি বুঝানোর জন্য ছোট্ট একটি উদাহরণ দিচ্ছি। ধরুন- আপনার একটি মোবাইলের দোকান আছে। আপনার দোকানে শুধুমাত্র এক ধরনের মোবাইল না রেখে বিভিন্ন কোম্পানির মোবাইল বিক্রি করেন (যেমন- সামসং, শায়মি, অপ্প ইত্যাদি)। এ ক্ষেত্রে আপনি সব ধরনের ফোন একসাথে এলামেলো করে না রেখে ফোনের কোয়ালিটি ও কোম্পানি অনুসারে আলাদা আলাদা সাজিয়ে রাখবেন। তাহলে কাস্টমারের চাহিদা অনুসারে সহজে যেকোন মোবাইল কাস্টমারদের দেখাতে পারবেন।

ঠিক একইবাবে এই পুরো বিশ্বে যত ওয়েবসাইট বা ব্লগ রয়েছে প্রত্যেকটা ওয়েবসাইটের মালিক আলাদা আলাদা বিষয়ে লিখে থাকেন। এখানে সার্চ ইঞ্জিন বট সবগুলো ওয়েবসাইটের বিষয় অনুসারে তাদের তথ্য ভান্ডারে আলাদা আলাদা সাজিয়ে রাখে। তারপর কোন ব্লগ তাদের তথ্য ভান্ডারের সবার উপরে রাখবে সেটা ওয়েবসাইটের মানের উপর নির্ভর করে। মূলত সার্চ ইঞ্জিনের এই প্রক্রিয়াটিকে ইনডেক্সিং বলা হয়। ইনডেক্সিং এর ভীতরে অনেকগুলো বিষয় থাকে। যেগুলো এখনে বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না।

ফলাফল প্রদান

আমরা যখন কোন কিওয়ার্ড লিখে গুগল সার্চ ইঞ্জিনে বা অন্য কোন সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ করি তখন সার্চ ইঞ্জিন বট তার ডাটাবেস থেকে ইনডেক্স করা লক্ষ লক্ষ পোস্ট থেকে রিলেভেন্ট রেজাল্ট আলগোরিদমের রেঙ্কিং ফ্যাক্টর বিবেচনা করে রেজাল্ট দেখায়। এই তিনটি প্রসেস মেনটেইন করার জন্য গুগলের হাজার হাজার কর্মী রয়েছে।

একটি সার্চ ইঞ্জিনে স্পাইডার, রোবট এবং অন্যান্য প্রোগ্রাম ব্যবহৃত হয় । এসব প্রোগ্রাম ওয়েবসাইট থেকে তথ্য সংরক্ষন করে এবং হাইপারলিঙ্ক ট্রেস করে। অন্যদিকে সার্চ রোবট বিভিন্ন সাইট থেকে ডকুমেন্ট এবং তথ্য খুঁজে বের করে এবং তা সার্চ ইঞ্জিন এর ডাটাবেজে সংরক্ষিত রাখে। যখন কেউ কোন তথ্য খুঁজে পাওয়ার জন্য সার্চ ইঞ্জিন এ সার্চ করে, তখন সার্চ ইঞ্জিন ডাটাবেজ চেক করে এবং সার্চ ইঞ্জিন ডাটাবেজ থেকে ফলাফল প্রদর্শন করে।

কিভাবে একটি পোস্ট সার্চ রেজাল্টে আসে?

এ বিষয়টি একজন ব্লগার বা ওয়েব ডেভেলপার এর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ একটি সাইট Crawl হওয়ার পরে এটি সার্চ ইঞ্জিনের হার্ড ডিস্কে মজুদ হয় কিন্তু এটি সার্চ ইঞ্জিনে প্রদর্শন করবে কি না বা স্থায়িভাবে মজুদ রাখা হবে কি না তা নির্ভর করবে Index হওয়ার উপর। আপনার ব্লগের লিংকটি যদি Index হয় তবেই আপনার লিখাটি সার্চ ইঞ্জিনে প্রকাশ হবে। এই Index হওয়া ডিপেন্ড করে আপনার আর্টিকেলের মানের উপর। আপনার লিখাটি যদি ভালমানেরে এবং ইউনিক হয় তাহলে অবশ্যই Index হবে এবং আর্টিকেলটি সার্চ ইঞ্জিনে সবার শীর্ষে থাকবে। আর যদি Index না হয় তাহলে Web Crawlers এটিকে তার মজুদ করা তথ্য হতে মুছে দেবে।

ভিডিও টিউটরিয়াল দেখুন

বিশ্বের কয়েকটি জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন

বর্তমান বিশ্বে হাজার হাজার সার্চ ইঞ্জিন রয়েছে। তন্মধ্যে Google, Bing, Yahoo, Baidu, Yandex, DuckDuckGo, Ask.com, AOL.com, WolframAlpha, Internet Archive উল্লেখযোগ্য। এগুলোর মধ্যে Google, Bing, Yahoo, Baidu, Yandex হচ্ছে সবচাইতে জনপ্রিয়। আর সবগুলো সার্চ ইঞ্জিনের মধ্যে গুগল সার্চ ইঞ্জিন হচ্ছে জনপ্রিয়তার শীর্ষে। সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটের প্রায় ৯১.৯৮ ভাগ গুগল নিজে একাই দখল করে রেখেছে।
বিশ্বের কয়েকটি জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন

গুগল সার্চ ইঞ্জিন

Google LLC বা গুগল লিমিটেড লায়াবেলিটি কোম্পানি ইন্টারনেটভিত্তিক সেবা ও পণ্যে বিশেষায়িত একটি আমেরিকান বহুজাতিক প্রযুক্তি কোম্পানি। স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি ছাত্র থাকাকালীন ল্যারি পেজ ও সের্গেই ব্রিন ১৯৯৮ সালে গুগল নির্মান করেন। গুগলের ১৪ শতাংশ শেয়ার তাদের এবং বিশেষ সুপারভোটিং ক্ষমতার মাধ্যমে ৫৬ শতাংশ স্টকহোল্ডারকে নিয়ন্ত্রণ করে।সেপ্টেম্বর ৪, ১৯৯৮ সালে তারা গুগলকে প্রাইভেট কোম্পানি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে। গুগল আগস্ট ১৯, ২০০৪ সালে ইনিশিয়াল পাবলিক অফারিং (আইপিও) দেয় ও গুগলপ্লেক্স নামে মাউন্টেইন ভিউতে তাদের নতুন সদরদপ্তরে স্থানান্তরিত হয়।

আগস্ট ২০১৫ সালে গুগল এর বিভিন্ন কার্যক্রম আলফাবেট ইনকর্পোরেটেড নামে সমন্বিত করার পরিকল্পনার কথা জানায়। আলফাবেটের প্রধান অধীনস্থ সংগঠন হিসেবে আলফাবেটের ইন্টারনেট কার্যক্রম পরিচালনা করবে। পুনগঠনের সমাপনী অংশ হিসেবে সুন্দর পিচাই গুগলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে ল্যারি পেজকে প্রতিস্থাপন করেন। (ল্যারি পেজ এখন আলফাবেটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা)
গুগল সার্চ ইঞ্জিন

Yahoo সার্চ ইঞ্জিন

Yahoo একটি বৃহৎ ইন্টারনেট ভিত্তিক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের সানিভেল শহরে এর প্রধান কার্যালয় অবস্থিত। ডেভিড ফিলো ও জেরি ইয়াং ইয়াহু এর প্রতিষ্ঠাতা। ইয়াহু'র রয়েছে ওয়েবসাইট, সার্চইঞ্জিন, ইয়াহু ডিকশেনারী, ইয়াহু মেইল, ইয়াহু নিউজ, ইয়াহু গ্রুপ, ইয়াহু এন্সার, অ্যাডভার্টাইজমেন্ট, অনলাইন ম্যাপ, ইয়াহু ভিডিও, সোশ্যাল মিডিয়া সেবা ইত্যাদি। ১৯৯৪ সালের জানুয়ারি মাসে ইয়াহু চালু হলেই ইনকর্পোরেটেড হয় ১৯৯৫ সালের ১ মার্চ। সংবাদ সংস্থাগুলো তথ্য অনুসারে ইয়াহুর নিয়মিত ব্যবহারকারী প্রায় ৭০০ মিলিয়ন। ইয়াহু দাবি করে প্রতি মাসে প্রায় ৫ কোটি মানুষ ৩০টি ভাষায় ইয়াহু ব্যবহার করে। গুগল চালু হওয়ার পূর্বে এবং গুগলের শুরুর দিকে মানুষ অনলাইনে কোনকিছু খুঁজার ক্ষেত্রে Yahoo সার্চ ইঞ্জিন বেশি ব্যবহার করত। গুগলের সফলতার কারনে Yahoo সার্চ ইঞ্জিন অনেকটা পিছিয়ে পড়েছে।
Yahoo সার্চ ইঞ্জিন

Bing সার্চ ইঞ্জিন

Bing হলো মাইক্রোসফট কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত একটি ওয়েব সার্চ ইঞ্জিন। যাদের পূর্বে লিভ সার্চ উইন্ডোজ লিভ সার্চ এবং এমএসএন সার্চ নাম ছিল। বিভিন্ন ধরনের অনুসন্ধান সেবা প্রদান করে যেমন - ওয়েব, ভিডিও, চিত্র এবং মানচিত্র ইত্যাদি অনুসন্ধান সরবরাহ করে। এটি এএসপি ডট নেট ব্যবহার করে তৈরি করা। বিং এর স্লোগান হচ্ছে ‘বিং এন্ড ডিসাইড’- অর্থাৎ, বিং এ সার্চ করুন এবং সিদ্ধান নিন। কেননা, মাইক্রোসফট বিং’কে ‘ডিসিশন ইঞ্জিন’ বলেও পরিচিত করেছে যা ব্যবহারকারীকে কোনো ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করতে পারে।
Bing সার্চ ইঞ্জিন

Baidu সার্চ ইঞ্জিন

এটি চীনের সর্বাধিক ব্যবহৃত সার্চ ইঞ্জিনগুলোর মধ্যে একটি। এটি ২০০০ সালের ১৮ জানুয়ারীতে প্রতিষ্ঠিত একটি চীনা ওয়েব সার্চ ইঞ্জিন। বাইডু প্রধানত ওয়েবসাইট, অডিও ফাইল, চিত্র খুঁজার জন্য ব্যবহৃত হয়। বাইডুর সূচীতে ৭৪০ মিলিয়নেরও অধিক ওয়েবসাইট, ৮০ মিলিয়ন চিত্র, ১০ মিলিয়ন মাল্টিমিডিয়া ফাইল রয়েছে। বাইডু ইন্টারনেটে মাল্টিমিডিয়া ফাইল যেমন-এমপিথ্রি, ভিডিও, চলচ্চিত্র ইত্যাদি খোঁজার সুযোগ দেয়। বাইডু চীনের প্রথম কোম্পানি যারা মোবাইল ভিত্তিক ওয়াপ ও পিডিএ সেবা প্রদান করে। বাইডু চীন সরকারের নীতিমালা অনুসারে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে। উল্লেখ্য, চীনারা নিজেদের এই সার্চ ইঞ্জিনের বাইরে অন্য কোন সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করে না বললেই চলে।
Baidu সার্চ ইঞ্জিন

Yandex সার্চ ইঞ্জিন

রাশিয়ায় সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত সার্চ ইঞ্জিন এটি। আসলে এটি একটি রাশিয়ান ইন্টারনেট কোম্পানি। এটি ১৯৯৭ সালে চালু করা হয়েছিল। ইউক্রেন, কাজাখাস্তান, বেলারুশ এবং তুরস্কের মধ্যেও এটি একটি চমৎকার সার্চ ইঞ্জিন হিসাবে কাজ করেছে। ইয়ানডেক্স মানচিত্র, ইয়ানডেক্স সঙ্গীত, অনলাইন অনুবাদক, ইয়েন্ডেক্স মানি এবং অন্যান্য অনেক পরিষেবা এই সার্চ ইঞ্জিনটি সরবরাহ করে। আপনি এই সার্চ ইঞ্জিনে ভিডিও এবং ছবি অনুসন্ধান করতে পারেন। তাছাড়া ফ্রি ইমেল পরিসেবাও প্রদান করা হয়।
Yandex সার্চ ইঞ্জিন

আমাদের শেষ কথা

উপরের লেখা থেকে আপনি অন্তত কিছুটা হলেও ধারনা নিতে পেরেছের যে, সার্চ ইঞ্জিন কিভাবে কাজ করে? আপনার ব্লগের কনটেন্ট যদি সবার সামনে সার্চ ইঞ্জিনের শীর্ষে প্রদর্শন করাতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে ভালমানের আর্টিকেল লিখতে হবে। তাছাড়াও আর কিছু নিয়ম রয়েছে যেগুলি আপনাকে মানতে হবে। যখন আপনার ব্লগের কনটেন্ট সার্চ ইঞ্জিনের শীর্ষে থাকবে তখনই আপনি একজন সফল ব্লগার হিসেবে পরিচিত হবেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post